উখিয়ায় বহিস্কৃত যুবলীগ নেতার নেতৃত্বে কলেজ ছাত্রকে পাশবিক নির্যাতন

উখিয়া (প্রতিনিধি) কক্সবাজার :

কক্সবাজারের উখিয়ায় সুপারি চুরির অপবাদ দিয়ে কলেজ ছাত্র কে মধ্যযুগীয় কায়দায় পাশবিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগী রায়হান (১৯) কক্সবাজার সিটি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র।

রবিবার (২৬ মার্চ) রাত ১০ টার দিকে এঘটনায় ফজল কাদের নামে বহিস্কৃত এক যুবলীগ নেতা কে প্রধান আসামী করে ৪ জনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাত ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় রায়হানের পিতা মোহাম্মদ আমিন মামলা দায়ের করেছেন।

জানা গেছে, উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের ডেইলপাড়া এলাকায় শনিবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যায় ফজল কাদেরের নেতৃত্বে চাঁর/পাচ জন রায়হানকে তুলে নিয়ে গিয়ে তার বাড়িতে প্রায় দুই ঘন্টা আটকে রেখে বিভিন্ন কায়দায় শারিরীক নির্যাতন চালায়।

পরে খবর পেয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় ফজল কাদেরের বাড়ির আঙ্গিনা থেকে স্থানীয়রা রায়হান কে উদ্ধার করলে চিকিৎসার জন্য তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, রায়হানের পিঠ,মুখ ও পেট সহ শরীরের বিভিন্ন অংশে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন আছে।

কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রায়হান বলেন, ” চুরি করেছি বলে ফজল কাদের ও তার ভাগিনা সহ ৪/৫ জন আমাকে তুলে নিয়ে তাদের বাড়িতে একটি কুঠির সঙ্গে বেধে মারধর করে। ইলেকট্রিক তার, লোহার রড দিয়ে তারা আমাকে উপরযুর্পরি আঘাত করলে আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ি।”

এঘটনায় অভিযুক্তদের বিচার দাবি করেছেন রায়হানের মা হুরাইতুল জান্নাত (৩৮)। তিনি বলেন, ” আমার ছেলে নির্দোষ, বিনা কারণে তাকে ফজল কাদের ও তার পরিবারের লোকজন অমানবিকভাবে মেরেছে। আমি তাদের বিচার চাই।”

ঘটনার মুল আসামী জালিয়াপালং ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক আহবায়ক ফজল কাদের তালিকাভূক্ত ইয়াবা কারবারি, এলাকাবাসীদের অভিযোগ মাদক ব্যবসা সহ সে বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িত।

২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগ উঠলে ফজল কাদের কে সংগঠন থেকে সাময়িক বহিস্কার সহ জালিয়াপালং ইউনিয়নের কমিটি বাতিল করে কক্সবাজার জেলা যুবলীগ।

একই বছরের সেপ্টেম্বরে র‍্যাবের হাতে ইয়াবা আটকের ঘটনায় রামু থানায় দায়ের করা মামলা’র (নং- ০২/৩২১) চার্জশিট থেকে ইয়াবা কারবারি ফজল কাদেরের নাম কৌশলে বাদ দেওয়ার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়।

কলেজ ছাত্রকে মারধরের প্রসঙ্গে ফজল কাদেরের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার বড়ভাই পরিচয়ে আজিজুল হক আজিজ নামে এক ব্যক্তি অভিযোগ অস্বীকার করেন।

আজিজ বলেন, “আমার ভাইকে মামলায় জড়ানোর জন্য ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে, সে এঘটনায় জড়িত না।”

রায়হানকে হাতে নাতে চুরির সময় আটক করার কথা উল্লেখ করলেও আজিজ জানান, তাকে কোন প্রকার মারধর করা হয়নি।

এপ্রসঙ্গে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ আলী জানান, ” মামলা গ্রহণ করা হয়েছে, এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।”